ট্রেন একের পর এক সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে মালদহ থেকে
মালদহবাসীর দীর্ঘদিনের অভিযোগ—একের পর এক দূরপাল্লার ট্রেন জেলার বাইরে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
দিল্লিগামী ফরাক্কা এক্সপ্রেস ইতিমধ্যেই মালদহের বদলে পাশের জেলা বালুরঘাট থেকে চালানো হচ্ছে।
এবার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে বেঙ্গালুরুগামী অমৃত ভারত এক্সপ্রেস-ও মালদহ থেকে সরিয়ে নেওয়ার।
জোরালো প্রতিবাদে তৃণমূল, স্মারকলিপি ডিআরএমকে
এই পরিস্থিতির প্রতিবাদ জানিয়ে মালদহ জেলা তৃণমূল কংগ্রেস বুধবার রেলের ডিআরএম মণীশকুমার গুপ্তকে স্মারকলিপি দেয়।
ডেপুটেশন কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন জেলা তৃণমূল সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সি।
দাবির তালিকায় নতুন ট্রেন ও রেল পরিষেবা উন্নয়ন
স্মারকলিপিতে মোট ৯ দফা দাবি পেশ করা হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য:
- মালদহ থেকে নতুন দূরপাল্লার ট্রেন চালু করা
- রেলের জমিতে বসবাসকারী মানুষদের পুনর্বাসন
- স্টেশনে পর্যাপ্ত পরিকাঠামো ও নিরাপত্তা বৃদ্ধি
- মালদহ জংশন থেকে নিত্যদিন চলাচলকারী ট্রেন সংখ্যা বাড়ানো
প্রশ্ন: মালদহকে এড়িয়ে ট্রেন কেন?
আব্দুর রহিম বলেন, “মালদহ থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ চিকিৎসা, শিক্ষা ও কাজের জন্য দিল্লি, বেঙ্গালুরু সহ বিভিন্ন রাজ্যে যান।
তাহলে কেন এই ঐতিহ্যবাহী ট্রেনগুলিকে সরিয়ে অন্য জেলায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে?”
তাঁর দাবি, বালুরঘাটে নতুন ট্রেন চালানো হোক, কিন্তু মালদহের ট্রেন সরিয়ে নয়।
উপস্থিত ছিলেন জেলার একাধিক নেতা
ডেপুটেশন কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন:
- চৈতালি সরকার, চেয়ারম্যান
- সুমালা আগরওয়াল, ইংলিশবাজার পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান
- গৌতম দাস, জেলা সম্পাদক ও কাউন্সিলার
- শুভদীপ সান্যাল, শ্রমিক নেতা
- শুভময় বসু, সহ সভাপতি
উচ্ছেদ অভিযান নিয়ে বিতর্ক
রেল বিভাগের বিরুদ্ধে অভিযোগ—রেলের জমিতে বসবাসকারী বহু মানুষকে উচ্ছেদ করার চেষ্টা চলছে।
জেলা সম্পাদক গৌতম দাস জানান যে, প্রায় ৪০ বছর ধরে মানুষ রেলের জমিতে বসবাস করছেন, অথচ রেল কর্তৃপক্ষ কোনও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করেই তাঁদের উচ্ছেদ করার চেষ্টা করছে।
ডিআরএম–এর প্রতিক্রিয়া
ডিআরএম জানিয়েছেন, রেল সরাসরি কোনও উচ্ছেদ অভিযান চালায়নি।
কিছু জায়গায় বিভ্রান্তিমূলক নোটিস জারি হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।
তবে জনসাধারণের পক্ষ থেকে কোনও লিখিত অভিযোগ এখনো জমা পড়েনি।
সাধারণ মানুষের কাছ থেকে কোনও সরাসরি অভিযোগ পাইনি।
রেল পরিষেবা নিয়ে ফের উত্তপ্ত মালদহ
একাধিক ট্রেন সরিয়ে নেওয়া, পরিষেবা হ্রাস এবং উচ্ছেদের আতঙ্ক—এই তিন ইস্যুতে মালদহে তৈরি হয়েছে চাপা অসন্তোষ।
তৃণমূলের ডেপুটেশন ও দাবিদাওয়ার ফলে রেল কতটা প্রতিক্রিয়া জানায় এবং পদক্ষেপ নেয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।