সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাশিয়া থেকে তেল ক্রয়ের বিষয়ে মন্তব্যের প্রেক্ষিতে ভারতের প্রতিক্রিয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে — দেশের স্বার্থই জ্বালানি নীতির প্রধান ভিত্তি। যদিও আন্তর্জাতিক চাপ বিদ্যমান, তবে ভারতের মূল লক্ষ্য হচ্ছে তার জনগণের জ্বালানি চাহিদা এবং মূল্য স্থিতিশীলতা বজায় রাখা।
ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রকের একটি বিবৃতি পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করেছে যে, দেশের জ্বালানি নিরাপত্তার প্রশ্নে কোনও আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক চাপের প্রতি আপস করা হবে না। বৈশ্বিক বাজারে অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে, ভারতের কৌশল হচ্ছে একটি ভারসাম্য বজায় রাখা—যেখানে একদিকে রয়েছে বিভিন্ন উৎস থেকে জ্বালানি গ্রহণের প্রচেষ্টা এবং অন্যদিকে রয়েছে কূটনৈতিক বাস্তবতা।
পশ্চিমের অনেক দেশের মতো ভারতও হঠাৎ করে কোনো একটি নির্দিষ্ট তেল সরবরাহকারী দেশের উপর তার নির্ভরতা কমাতে সক্ষম নয়। কারণ ভারতের বিশাল জনসংখ্যা এবং দ্রুত বৃদ্ধিপ্রাপ্ত জ্বালানির চাহিদা এর পিছনে মূল কারণ। এই প্রেক্ষাপটে, ভারতকে নিশ্চিত করতে হবে যে জ্বালানির দাম নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং সরবরাহে কোনো ঘাটতি সৃষ্টি হচ্ছে না।

গত দশকে ভারত তার তেল সরবরাহের উৎসগুলোকে ব্যাপকভাবে সম্প্রসারিত করেছে। দেশটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের সাথে সম্পর্ক দৃঢ় করেছে। বর্তমান মার্কিন প্রশাসনের ভারত-মার্কিন জ্বালানি সহযোগিতা বাড়ানোর আগ্রহও ভবিষ্যতের জন্য একটি আশাব্যঞ্জক লক্ষণ।
যাঁরা ভারতের নির্দিষ্ট রাজনৈতিক জোটে থাকার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন, তাঁদের উচিত India’s পরিস্থিতি ভালোভাবে বোঝা। ভারত একটি উন্নয়নশীল দেশ, যেখানে অর্থনীতির একটি বড় অংশ জ্বালানি আমদানির ওপর নির্ভরশীল। এই প্রেক্ষাপটে, ভারতের কৌশলগত সিদ্ধান্তগুলো মূলত দেশের প্রকৃত প্রয়োজন এবং স্বার্থের ভিত্তিতে গঠিত হয়।
বিশ্ব রাজনীতির সঙ্গে জ্বালানির সম্পর্ক যতই জটিল হয়ে উঠুক, ভারতের অবস্থান স্পষ্ট — দেশের মানুষের জীবন ও তাদের জীবনযাত্রাই অগ্রাধিকার। সুতরাং, বিশ্বের অন্যান্য দেশের উচিত এই বাস্তবতাকে স্বীকার করে জ্বালানি সংক্রান্ত বিষয়ে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতার মনোভাবকে বজায় রাখা।