গত বছরের ১৫ অগস্ট ভারতের ৭৮তম স্বাধীনতা দিবসে ‘বিকশিত ভারত’-এর লক্ষ্যের রূপরেখা ঘোষণা করেছিল কেন্দ্র সরকার। সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য দেশের আর্থিক উন্নয়ন ও প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
এই বৃহৎ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে, দেশের গাড়ি শিল্পকে আন্তর্জাতিক মানচিত্রে নেতৃত্বের আসনে বসাতে ‘অটোমোটিভ মিশন প্ল্যান ২০৪৭’-এর সূচনা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ভারী শিল্প মন্ত্রকের তরফে এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে এই প্রকল্পের সূচনা ও অগ্রগতি সংক্রান্ত তথ্য জানানো হয়।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে ভারতের অটোমোবাইল শিল্পের সার্বিক বিকাশ, রপ্তানি বৃদ্ধি এবং গ্লোবাল অটোমোটিভ ইন্ডাস্ট্রিতে ভারতের প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান শক্তিশালী করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এই লক্ষ্যে সম্প্রতি গঠিত সাব-কমিটি একটি বৈঠকে মিলিত হয়, যেখানে তিনটি ধাপে— ২০৩০, ২০৩৭ ও ২০৪৭ সালের মধ্যে— কাজ সম্পূর্ণ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
সরকার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিল্প বিশেষজ্ঞ এবং গবেষণা সংস্থাগুলির সমন্বয়ে গঠিত সাতটি সাব-কমিটি এই প্রকল্পের রূপরেখা ও কৌশল নির্ধারণে যুক্ত থাকবে। গাড়ি শিল্পের প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতা, চার্জিং পরিকাঠামোর উন্নয়ন এবং রপ্তানিযোগ্য গাড়ির মানোন্নয়ন এই প্রকল্পের মূল চ্যালেঞ্জ।
ভারী শিল্প মন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিব হানিফ কুরেশি বলেন,
“২০৪৭ সালের মধ্যে বিকশিত ভারতের লক্ষ্য পূরণে গাড়ি শিল্প একটি কৌশলগত স্তম্ভ হিসেবে কাজ করবে। উদ্ভাবনী প্রযুক্তি ও উচ্চমানের গাড়ি নির্মাণের মাধ্যমে ভারতকে গ্লোবাল বাজারে নেতৃত্বে নিয়ে যেতে হবে।”
এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে বিদ্যুৎ, সড়ক পরিবহণ, বাণিজ্য, পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত মন্ত্রকগুলি। এছাড়াও শিল্প ও বণিক সংগঠন যেমন SIAM, ACMA, CII, FICCI, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, গবেষণা সংস্থা ও টেস্টিং এজেন্সিগুলিও এই বৈঠকে অংশ নেয়।
প্রসঙ্গত, ২০২৬ সালের অটোমোটিভ মিশন প্ল্যানেও ভারতের গাড়ি শিল্পকে বিশ্বের প্রথম তিনে পৌঁছনোর লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছিল। সেই সময় দেশের জিডিপি-তে গাড়ি শিল্পের অবদান ছিল ১২ শতাংশেরও বেশি, এবং প্রায় ৬.৫ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল।
এবার ২০৪৭-এর দিকে এগিয়ে সেই উদ্যোগকে আরও বিস্তৃত ও পরিকল্পিতভাবে রূপায়ণের পথে এগোচ্ছে কেন্দ্র সরকার।