ভারতের অন্যতম পবিত্র তীর্থস্থানের পবিত্রতা রক্ষার জন্য, ওড়িশা সরকার Puri -র জগন্নাথ মন্দিরের দুই কিলোমিটারের মধ্যে মাংস, ডিম এবং অ্যালকোহলযুক্ত পানীয় বিক্রি এবং গ্রহণ নিষিদ্ধ করে কঠোর আইন প্রণয়নের পরিকল্পনা করছে।
অ্যালকোহল এবং আমিষ খাবার নিয়ন্ত্রণ
বিজেপি-নেতৃত্বাধীন ওড়িশা সরকার Puri -র জগন্নাথ মন্দিরের আশেপাশে মাংস, মাছ এবং ডিম সহ কোনও আমিষ খাবার খাওয়া নিষিদ্ধ করার জন্য একটি নতুন নিয়ম বাস্তবায়নের ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। এছাড়াও, এখানে মদ অনুমোদিত হবে না। এর মধ্যে অনুমোদিত এলাকার মধ্যে অবস্থিত বার এবং মদের দোকান বন্ধ করা বা স্থানান্তর করা অন্তর্ভুক্ত।
গ্র্যান্ড রোডের দিকে সবার নজর
এই নিষেধাজ্ঞা সম্পূর্ণরূপে গ্র্যান্ড রোডের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে, যা মূল জগন্নাথ মন্দির এবং গুন্ডিচা মন্দিরের মধ্যে অবস্থিত, যা দেবতার মাসির বাসস্থান বলে জানা যায়। বার্ষিক রথযাত্রা অনুষ্ঠান, যেখানে দেবতা জগন্নাথ, বলভদ্র এবং সুভদ্রার একটি দর্শনীয় শোভাযাত্রা থাকে, এই পথ ধরে অনুষ্ঠিত হয়। এই অংশে, সরকার এমন একটি বাস্তুতন্ত্র সংরক্ষণ করতে চায় যা সম্পূর্ণ পবিত্র।
বাস্তবায়নের সময়রেখা এবং উৎসব প্রেক্ষাপট
যদিও আইনটি কার্যকর করার সুনির্দিষ্ট তারিখ এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়নি, তবে আইনটি শীঘ্রই কার্যকর হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই বছরের রথযাত্রার ঠিক আগে, যা ২৭শে জুন নির্ধারিত, এই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল। বার্ষিক স্নানযাত্রা, বা দেবতাদের ধর্মীয় স্নান, তার আগে ১১ই জুন অনুষ্ঠিত হবে এবং পুরী ইতিমধ্যেই এর জন্য কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
নিরাপত্তা এবং নজরদারি ব্যবস্থা
স্নানযাত্রার জন্য প্রশাসন কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, পুরীর চারপাশে ৭০টি পুলিশ প্লাটুন মোতায়েন করা হয়েছে। ভিড় নিয়ন্ত্রণ এবং ধর্মীয় অনুষ্ঠান নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করার জন্য, বাধা তৈরি করা হচ্ছে এবং কৌশলগত পয়েন্টগুলিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি সহ অত্যাধুনিক নিরাপত্তা ক্যামেরা স্থাপন করা হবে।
গ্র্যান্ড রোড বরাবর নগর পরিকল্পনা
সরকার গ্র্যান্ড রোডের ধারে অবস্থিত ভবনগুলির স্থাপত্য এবং কাঠামোগত নকশাকে মানসম্মত করার প্রস্তাব করছে, পাশাপাশি খাবার এবং অ্যালকোহল নিষিদ্ধ করারও প্রস্তাব করছে। শ্রী জগন্নাথ মন্দির প্রশাসন (SJTA) কর্তৃক গৃহায়ন ও নগর উন্নয়ন বিভাগের কাছে করা অনুরোধের প্রেক্ষিতে এই প্রকল্পটি করা হয়েছে। লক্ষ্য হল মন্দিরের চারপাশের পরিবেশকে আরও নান্দনিক এবং আধ্যাত্মিকভাবে আকর্ষণীয় করে তোলা।
পর্যটন প্রভাব
বাঙালি তীর্থযাত্রী এবং দর্শনার্থীরা পুরীকে পছন্দ করেন, যেখানে তারা চিলিকা হ্রদ, পুরীর সমুদ্র সৈকত, নন্দনকানন চিড়িয়াখানা, কোনার্ক সূর্য মন্দির এবং উদয়গিরি-খণ্ডগিরি গুহা সহ কাছাকাছি স্থানগুলি ঘুরে দেখতে পারেন। নতুন নিয়মগুলি স্বর্গদ্বার, চক্রতীর্থ রোড এবং লাইটহাউস এলাকার মতো সুপরিচিত পর্যটন আবাসস্থলগুলিতে প্রযোজ্য হবে না কারণ এগুলি দুই কিলোমিটারের সীমাবদ্ধ অঞ্চলের বাইরে।
আসন্ন নীতিমালা জগন্নাথ মন্দিরের আধ্যাত্মিক পবিত্রতা বজায় রাখার জন্য ওড়িশা সরকারের নিষ্ঠার প্রতিফলন ঘটায়। এই পদক্ষেপগুলি আগামী ছুটির মরসুমে পুরীতে আসা লক্ষ লক্ষ ভক্তের পবিত্র পরিবেশ উন্নত করার উদ্দেশ্যে।