বিয়ে, মধুচন্দ্রিমা এবং হঠাৎ নিখোঁজ
গত ১১ মে মধ্যপ্রদেশের ইনদওরের বাসিন্দা রাজা রঘুবংশী ও সোনমের বিয়ে হয়। বিয়ের পরে ২০ মে নবদম্পতি মধুচন্দ্রিমায় যান মেঘালয়ের শিলঙে। ২৩ মে তাঁদের শেষবার দেখা গিয়েছিল। এরপর আর কারও সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি তাঁদের।
স্কুটির GPS-এ রহস্যের সূত্র
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৩ মে দুপুর সওয়া ১টায় আত্মীয়দের সঙ্গে সোনমের শেষবার ফোনে কথা হয়েছিল। স্কুটির জিপিএস ডেটা বলছে, দুপুর ২টা নাগাদ স্কুটিটি থেমে যায়। তদন্তকারীরা মনে করছেন, দুপুর ২টা থেকে আড়াইটার মধ্যে এই দম্পতির উপর হামলা চালানো হয়ে থাকতে পারে।
রাজা নিহত, সোনম নিখোঁজ
দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর, ২ জুন সোহরার (চেরাপুঞ্জি) একটি গভীর খাদ থেকে উদ্ধার করা হয় রাজার ক্ষতবিক্ষত দেহ। তাঁর ফোন ও একটি ধারালো অস্ত্রও উদ্ধার করা হয়েছে দেহের পাশে। পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থলের আশপাশে একটি কালো বর্ষাতি (রেনকোট) পাওয়া গেছে, যাতে কিছু সন্দেহজনক দাগ রয়েছে। সেটি রক্তের দাগ কি না, তা জানার জন্য ফরেন্সিক পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে।
বাংলাদেশ পাচার তত্ত্বে নতুন মোড়
পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, হামলার সময় সোনমকে অপহরণ করা হয় এবং সম্ভবত সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে পাচার করা হয়েছে। কারণ, যে স্থানে তাঁদের শেষ অবস্থান শনাক্ত হয়, সেখান থেকে বাংলাদেশ সীমান্ত খুব কাছেই। যদিও এখনও পর্যন্ত এর কোনও প্রত্যক্ষ প্রমাণ পুলিশের হাতে নেই।
বাংলাদেশ পুলিশের সঙ্গে সমন্বয়
সূত্র অনুযায়ী, মেঘালয় পুলিশ ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। সোনমের পরিবারও সন্দেহ প্রকাশ করেছে, তাঁদের মেয়েকে মানবপাচার চক্র অপহরণ করে নিয়ে গিয়েছে।
বিশেষ প্রযুক্তির সাহায্য ও তল্লাশি অভিযান
সোনমকে খুঁজে পেতে পুলিশ ড্রোন, স্যাটেলাইট ইমেজ এবং মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মতো নানা প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। সোহরার আশপাশের ৫০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে তল্লাশি চলছে। পাশাপাশি, গত এক মাসে ডবল ডেকার সেতু অঞ্চলে যে সব গাড়ি গিয়েছে, সেই সব গাড়ির তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।
শেষ অবস্থান ও হোটেল সূত্র
তদন্তে উঠে এসেছে, রাজা ও সোনম সোহরার একটি হোটেলে উঠেছিলেন। সেখান থেকে তাঁরা গিয়েছিলেন মৌলাকায়া গ্রামে। ২৪ মে তাঁরা একটি স্কুটি ভাড়া নেন, যার মাধ্যমে তাঁরা ঘোরাঘুরি করছিলেন। এর পর থেকেই তাঁদের আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।
প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে পুলিশ
রাজার মৃত্যুর রহস্য ও সোনমের নিখোঁজ হওয়া—এই দুটি ঘটনার জট খুলতে মরিয়া পুলিশ। পাচার তত্ত্ব, লুটপাট নাকি অন্য কোনও গভীর ষড়যন্ত্র—এই রহস্যের গরলভেদেই মিলতে পারে সোনমের খোঁজ। পরিবারের পাশাপাশি গোটা দেশ অপেক্ষা করছে সেই উত্তরের।