রসনায় খিচুড়ি

ঐতিহাসিক মতে জানা যায়, মেগাস্থিনিস থেকে আকবর, জাহাঙ্গীর থেকে জগন্নাথ সবাই ই খিচুড়ির স্বাদ আস্বাদন করেছেন। বাংলার এনসাইক্লোপিডিয়া বা বিশ্বকোষের মতে খিচুড়ি শব্দটি এসেছে ‘ খেচর ‘ শব্দ থেকে।
বঙ্গীয় শব্দকোষের প্রকৃত শব্দ ‘ কিসর /কৃসরা ‘ শব্দ বিবর্তিত হয়ে খিচুড়ি শব্দটি এসেছে বলে ধরা হয়।
তথ্য অনুযায়ী, চাণক্যের লেখায় মৌর্য সম্রাট চন্দ্রগুপ্তের শাসন কালে চাল ও ডালের মিশ্রনে তৈরী খিচুড়ির উল্লেখ মেলে। মুঘল সাম্রাজ্যেও কাজু, কিশমিস, পেস্তা সহযোগে খিচুড়ির উল্লেখ আমরা পেয়ে থাকি।
বাংলার ‘ মনসা মঙ্গল ‘ কাব্যে খিচুড়ির উল্লেখ রয়েছে। প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া থেকে ধান ভারতবর্ষে এসেছিলো কিন্তু ডাল কোনোভাবেই এদেশের খাবার ছিলোনা। ডালের জন্মসূত্র মধ্যপ্রাচ্যে, যা সেখান থেকে আফগানিস্তান তারপর পাকিস্তান হয়ে ভারতে র উত্তরে প্রবেশ করে এবং সেই ডাল পৌছায় বাংলাতেও।
খিচুড়িকে নিজের মত তৈরী করে নেওয়া হয়েছে দেশে – বিদেশে। জায়গা অনুযায়ী এর স্বাদ ও রান্নার ধরণও পরিবর্তিত হয়েছে।
এই খিচুড়ি যে শুধু বাঙালি প্রিয় তা নয়। গোটা দেশেই চাল – ডাল সংমিশ্রনে যে ঘ্যাট হয় ব্যাচ
‘ খিচড়ি ‘ বলে চেনে অবাঙালিগন।
তবে পশ্চিমবঙ্গে জ্বর খিচুড়ি তৈরী হবে সেই রান্নার স্বাদ ও উপকরণ বদল হবে ওপার বাংলা অর্থাৎ বাংলাদেশে। আবার ভারতের দক্ষিণ প্রান্তে ও উত্তর প্রান্তে খিচুড়ির প্রণালী ভিন্ন হবে।এই খিচুড়ির আবার আমিষ ও নিরামিষ প্রকার ভেদও আছে। তবে যাই হোকনা কেন বাংলা ও বাঙালির খিচুড়ির চর্চা রয়েছে সমগ্র বিশ্ব জুড়েই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *