কার হাত ধরে শুরু হল শ্রাবণের কানওয়ার যাত্রা?

শ্রাবণ মাস এলেই রাস্তায় দেখা যায় অনেক ভক্ত—কাঁধে বাঁক ঝুলিয়ে গঙ্গাজল নিয়ে হাঁটছেন। এঁরা সবাই যাচ্ছেন কোনও শিবমন্দিরে, মহাদেবের মাথায় জল ঢালতে। এই যাত্রাকে বলা হয় কানওয়ার যাত্রা। বাঁক বহন করা মানুষদের বলা হয় কানওয়ারিয়া

এই যাত্রার মাধ্যমে শিবকে খুশি করা যায়—এই বিশ্বাস বহু যুগ ধরে চলে আসছে। কিন্তু অনেকেই জানতে চান, এই কানওয়ার যাত্রা কবে ও কার দ্বারা শুরু হয়েছিল? চলুন, সহজ ভাষায় জেনে নিই।


১. পরশুরাম

অনেকে মনে করেন, কানওয়ার যাত্রা প্রথম শুরু করেন বিষ্ণুর অবতার পরশুরাম। তিনি গঙ্গা থেকে জল নিয়ে তা নিবেদন করেন উত্তরপ্রদেশের পুরা মহাদেব মন্দিরে। এই কাজটি তিনি শ্রাবণ মাসেই করেছিলেন। আজও লক্ষ লক্ষ ভক্ত সেই পথ অনুসরণ করেন।


২. শ্রীরামচন্দ্র

‘আনন্দ রামায়ণ’ অনুসারে, ভগবান রামচন্দ্রও ছিলেন একজন কানওয়ারিয়া। তিনি বিহারের সুলতানগঞ্জ থেকে গঙ্গাজল নিয়ে গিয়েছিলেন দেওঘরের বৈদ্যনাথ মন্দিরে, যেখানে তিনি শিবলিঙ্গে জল নিবেদন করেন।


৩. রাবণ

প্রাচীন কিছু কাহিনিতে বলা হয়েছে, রাবণই ছিলেন প্রথম কানওয়ারিয়া
সমুদ্র মন্থনের সময় ওঠা বিষ হলাহল পান করার পর মহাদেব খুব যন্ত্রণায় ছিলেন। তখন রাবণ গঙ্গাজল এনে তাঁর শরীরে ঢালেন এবং তাঁর যন্ত্রণা কমাতে সাহায্য করেন। সেই জন্য রাবণকে অনেকে এই যাত্রার সূচক মনে করেন।


৪. দেবতারা

কিছু পুরাণ অনুসারে, শিব যখন বিষ পান করে কষ্ট পাচ্ছিলেন, তখন অন্যান্য দেবতারাও গঙ্গাজল এনে তাঁর উপর ঢেলে দেন। এই ঘটনা থেকেও এই গঙ্গাজল নিবেদনের প্রথার শুরু হয়েছে বলে মনে করা হয়।


শ্রাবণ মাসে মহাদেবকে খুশি করতে গঙ্গাজল নিবেদন করার রীতি বহু যুগ ধরে চলে আসছে। এই বিশ্বাস ও ভক্তির কারণেই আজও কোটি কোটি মানুষ কাঁধে বাঁক নিয়ে এই যাত্রা করেন।

ভোলেনাথ সব শুনছেন — এই আশাতেই তাঁরা হাঁটেন শত শত কিলোমিটার পথ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *