হেনরি রাবার্ট মার্সেল ডুচ্যাম্প ছিলেন একজন ফারাসি চিত্রশিল্পী, ভাস্কর, দাবা খেলোয়াড় এবং লেখক। যার কাজ কিউবিজম, দাদা, ভবিষ্যৎবাদ এবং ধারনগত শিল্পের সাথে সম্পর্কিত।
পাবলো পিকাসো, হেনরি ম্যাটিস ও ডুচ্যাম্প এর নাম একসাথে নেওয়া হয়ে থাকে যারা বিংশ শতাব্দির প্রথম দশকে প্লাস্টিক শিল্পের বিপ্লবী বিকাশকে সংজ্ঞায়িত করতে সাহায্য করেছিলেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি তার অনেক সহশিল্পীর কাজ কে রেটিনাল অর্থাৎ যা কেবল চোখের জন্য তৈরী তা তিনি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। পরিবর্তে তিনি মনের সেবা করার জন্য শিল্পকে ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন।
ডুচ্যাম্পকে একজন অগ্রণী ব্যক্তি হিসাবে স্মরণ করা হয় আংশিক ভাবে তার উস্কে দেওয়া দুটি বিখ্যাত কেলেঙ্কারির কারণে। তার “ন্যুড ডিসেন্ডিং আ সিঁড়ি ” যা ১৯১৩ সালের ঐতিহাসিক আর্মরী শো এর সবচেয়ে আলোচিত কাজ ছিল এবং তার ” ফাউন্টেন ” ১৯১৭ সালের সোসাইটি অফ ইন্ডিপেন্ডেট আর্টিস্টস প্রদর্শনীতে প্রদর্শীত একটি স্বাক্ষরিত একটি প্রস্বাবখানা যা প্রায় একক ভাবে নিউ ইয়র্ক এর শিল্প জগতকে ‘ শিল্প কি?’ এই প্রশ্নটি নিয়ে ভাবতে বাধ্য করেছিল।
১৯১২ সালে মিউনিখ এ থাকাকালীন তিনি তার কিউবিষ্ট সদৃশ চিত্রকর্ম গুলির শেষটি এঁকেছিলেন। তিনি ” দ্য ব্রাইড স্ট্রিপড বেয়ার বাই হার ব্যাচেলরস “ইভেন ইমেজ শুরু করেছিলেন এবং” দ্য লার্জ গ্লাস ” এর জন্য পরিকল্পনা করতেও শুরু করেছিলেন। ১৯১২ সালের পর ডুচ্যাম্প খুব কম ক্যানভাস এঁকেছিলেন এবং যেগুলো তিনি করেছিলেন সেগুলি থেকে তিনি চিত্রকর এর প্রভাবগুলি অপসারণ করে প্রযুক্তিগত অঙ্কন পদ্ধতি ব্যবহার করেছিলেন।
তার প্ৰিয় কাজ গুলির মধ্যে একটি “3 স্ট্যান্ডার্ড স্টপেজ ” তৈরী করতে তিনি ১ মিটার উচ্চতা থেকে প্রস্তুত ক্যানভাস এ তিনটি ১ মিটার লম্বা সুতো ফেলেছিলাইন একেকবারে একটি করে। সুতগুলি তিনটি এলোমেলো ভাবে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে পড়েছিল, তিনি নীল – কালো ক্যানভাস স্ট্রিপগুলিতে সেগুলোকে বার্নিশ করে কাঁচের সাথে সংযুক্ত করেছিলেন। তারপরে তিনটি কাঠের স্ল্যাট বাঁকা তারের আকারে কেটেছিলেন এবং সমস্ত টুকরো একটি ক্রকেট বাক্সে রেখেছিলেন। সোনালী রঙে মুদ্রিত শিরোনাম সহ তিনটি ছোট চামড়ার চিন্হ ‘ স্টপেজ ‘ ব্যাকগ্রাউন্ডে আঠা দিয়ে আটকানো হয়েছিল। টুকরোটি আক্ষরিক অর্থে পয়নকারের স্কুল অফ দ্য থ্রেড অনুসরণ করে বলে মনে হচ্ছে যা ধ্রুপদি বলবিদ্যার উপর একটি বইয়ের অংশ।
ডুচ্যাম্প রেটিনা বা চাক্ষিক চিত্র থেকে গেলেও পুরোপুরি তার থেকে দূরে যেতে পারেননি যা আমরা তার অন্য শিল্পে অনুভব করে থাকি।
শিল্প বিষয়ে তিনি বলেছিলেন ” আমি শিল্পে বিশ্বাস করিনা, শিল্পীতে বিশ্বাস করি ‘।
২ য় অক্টোবর ১৯৬৮ সালে ৮১ বছর বয়সে এই মহান অগ্নিশিক্ষা নির্বাপিত হয়।