উপশিরোনাম সমূহ:
- কোলকাতার প্রাণকেন্দ্রে সবুজ ধ্বংসের অভিযোগ
- খ্রিস্টান বুরিয়াল বোর্ডের নীরব ভূমিকা
- পরিবেশ দিবসে ফাঁস বড় ধরনের গাছ কাটার তথ্য
- ঐতিহ্য ও বাস্তুতন্ত্র একসঙ্গে বিপন্ন
গাছ কাটার অভিযোগ তুলে সামনে এলেন প্রাক্তন সুপারভাইজার
ঐতিহাসিক লোয়ার সার্কুলার রোড কবরস্থানে বেআইনি গাছ কাটার অভিযোগে পরিবেশবিদ ও নাগরিক মহলে ক্ষোভ ছড়িয়েছে। অভিযোগ তুলেছেন খ্রিস্টান বুরিয়াল বোর্ডের প্রাক্তন শ্রম সুপারভাইজার রিচার্ড সিং। তাঁর মতে, কবরস্থানে কেবল ডালপালা ছাঁটাই নয়, সম্পূর্ণ গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। তিনি জানান, গাছের গোড়া থেকে কাটা কাণ্ড পড়ে থাকার ছবি ও ভিডিও প্রমাণ তার কাছে রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো সত্ত্বেও তাকে গুরুত্ব না দিয়ে বরং তাঁর কাজে বাধা দেওয়া হয়েছে এবং পরে তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।
বোর্ডের সদস্যদের বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগ
সিংয়ের দাবি, কবরস্থানের সেক্রেটারি মার্গারেট এক্কা ব্যক্তিগতভাবে এই গাছ কাটার কাজ তত্ত্বাবধান করেছেন। তিনি বোর্ডের সদস্যদের কাছে বিষয়টি উপস্থাপন করলেও, তাঁরা কেবল ‘ছাঁটাই’ হয়েছে বলে জানিয়ে অভিযোগকে গুরুত্ব দেননি।
একটি সময়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে বিষয়টি ভাইরাল হওয়ায় কিছুদিনের জন্য গাছ কাটা বন্ধ হলেও, মে ২০২৪ থেকে আবার তা শুরু হয়েছে বলে সিংয়ের অভিযোগ। কিছু কাঠ ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান।
ঐতিহ্যবাহী কবরস্থান ও পরিবেশের উপর প্রভাব
১৮৮৪ সাল থেকে সক্রিয় এই কবরস্থানটি কেবল একটি সমাধিক্ষেত্র নয়, এটি একটি ঐতিহাসিক ও পরিবেশগত স্থাপনাও। এখানে বিরল প্রজাতির গাছপালা রয়েছে, যেগুলির উপর বোটানির ছাত্ররা গবেষণা করে থাকে।
এই স্থানটি পাখিপ্রেমীদের আশ্রয়স্থল এবং শহরের গুরুত্বপূর্ণ কার্বন সিঙ্ক হিসেবেও কাজ করে। এই ধরনের বেআইনি গাছ কাটা শুধুমাত্র পরিবেশ আইন লঙ্ঘন নয়, এটি একটি প্রাকৃতিক সম্পদের উপর সরাসরি আঘাত বলে মনে করছেন পরিবেশবিদরা।
ভবিষ্যতে আইনি ও আন্তর্জাতিক পদক্ষেপের সম্ভাবনা
বোর্ডের এক প্রাক্তন নির্বাহী সদস্য জানিয়েছেন, এই ধরণের গাফিলতির ফলে পরিবেশ ও ঐতিহ্য রক্ষা সংস্থাগুলির নজরে আসতে পারে বোর্ড। এমনকি আন্তর্জাতিক পর্যায়েও এই ঘটনায় প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে, বিশেষত কমনওয়েলথ যুদ্ধ সমাধিক্ষেত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলি এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করতে পারে।
আগামী পদক্ষেপ ও আহ্বান
রিচার্ড সিং জানান, তিনি এখন পরিবেশবিদ ও সংরক্ষণমূলক সংগঠনগুলোর সাহায্য চাইবেন যাতে এই ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড বন্ধ করা যায়। তাঁর অভিযোগ, গাছ কাটা প্রকাশ্যে ঘটছে এবং তাতে কেউ বাধা দিচ্ছে না। তাঁর মতে, দৃশ্যমান প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও দায়িত্বশীল কেউ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।