সুরতালের সান্নিধ্যে দুইসঙ্গীত সম্মেলন

ধ্বনি একাডেমির বার্ষিক সঙ্গীত উৎসব

বেহালার সারট সদনে ধ্বনি একাডেমি অফ পারকাশন মিউজিক-এর বাৎসরিক উৎসব অনুষ্ঠিত হয় অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিচালনায়। অনুষ্ঠানে প্রজন্মান্তরে ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের বিবর্তন উঠে আসে নানা পরিবেশনার মাধ্যমে।


আলোকপ্রাপ্ত পরিবেশনা: কলকাতা ব্লাইন্ড স্কুল

একটি ব্যতিক্রমী ও হৃদয়স্পর্শী পরিবেশনা ছিল কলকাতা ব্লাইন্ড স্কুলের ছাত্রদের। পল্লব ঘোষের পরিচালনায় অংশ নেন প্রসেনজিৎ ভৌমিক, ঋতুরাজ মান্না, নেপাল সিংহ, রণিত বসাক, সায়ন মণ্ডল ও দীপ সাহা।


 সুবাসিষ মুখোপাধ্যায়: মারু বিহাগ বাহার

রাগ মারু বিহাগে বিলম্বিত ও তিনতাল খেয়াল পরিবেশন করেন সুবাসিষ মুখোপাধ্যায়। পরে রাগ বাহারে গিরিজা শঙ্কর চক্রবর্তীর বিরল রচনার সঙ্গীতায়ন ছিল আকর্ষণীয়। তবলায় ছিলেন উচ্ছ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, হরমোনিয়ামে রঞ্জন মুখোপাধ্যায়।


 মীতা নাগ: সেতারে জয়জয়ন্তী কাফি

মীতা নাগ সেতারে পরিবেশন করেন রাগ জয়জয়ন্তীর আলাপ, জোর ও ঝালা এবং বিলম্বিত ও তিনতাল গৎ। রাগ কাফিতে তাঁর মধ্যলয়ের পরিবেশনা ছিল সুরেলা। তবলায় ছিলেন ইন্দ্রনীল মল্লিক।


 স্যান্ডিপ মালিকের কথক নৃত্য

রবীন্দ্রসঙ্গীত দিয়ে শুরু করে তিনি পরিবেশন করেন ঠাট, আমোদ, পরান, তৎকার ও তিহাই। সঙ্গত করেন সুবীর ঠাকুর ও জয়দীপ সিনহা (তবলা), সুনন্দা মুখোপাধ্যায় (সরোদ) ও অনিরুদ্ধ মুখোপাধ্যায় (ভোকাল)।


 সমপ্রিয় গোস্বামীর শ্রীখোল

পণ্ডিত জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষ পুরস্কারপ্রাপ্ত সমপ্রিয় গোস্বামী শ্রীখোল পরিবেশন করেন হিরণ্ময় ঢালির হরমোনিয়াম সঙ্গতে।


 আবির হোসেন রাগ হংসকিঙ্কিণি

রাগ ভিমপলাসি ও যোগ-এর মিশ্রণে সৃষ্ট বিরল রাগ হংসকিঙ্কিণি পরিবেশন করেন আবির হোসেন। তবলায় সহায়তা করেন বেঙ্কটেশ ডি.সি.।


 হর্ষ নারায়ণ: সরস্বতী মিশ্র পিলু

সরঙ্গীতে রাগ সরস্বতী পরিবেশন করেন হর্ষ নারায়ণ, শেষে রাগ মিশ্র পিলু। তবলায় ছিলেন দীপিন দাস।


 সঞ্জু সাহায়ের একক তবলা

সঞ্জু সাহায়ের তবলা একক পরিবেশনা ছিল অনুষ্ঠান-সমাপ্তির এক চূড়ান্ত মুহূর্ত। হরমোনিয়ামে সঙ্গত করেন হিরণ্ময় মিত্র। অনুষ্ঠানের সঞ্চালনায় ছিলেন কৌশিক সেন।


 স্বরদরবার সঙ্গীত সম্মেলন: উত্তম মঞ্চে দেশজোড়া সুরসঙ্গম


 হেমন্ত মণি তিওয়ারির ভজন

উৎসব শুরু করেন হেমন্ত মণি তিওয়ারি, ভজন পরিবেশনায় সঙ্গে ছিলেন দীপঙ্কর রায় (তবলা) ও সমীরণ বিশ্বাস (হরমোনিয়াম)।


 রাকেশ পাঠক: পুর্বী বসন্ত

রাকেশ পাঠক রাগ পুর্বী ও বসন্ত পরিবেশন করেন, তবলায় ছিলেন অরুণাভ মুখার্জি।


 কমলা শঙ্কর: স্লাইড গিটারে মারুবিহাগ

রাগ মারুবিহাগ এবং মিশ্র পিলুর ধুন পরিবেশন করেন কমলা শঙ্কর।


 সান্দিপ ভট্টাচার্য: রাগ যোগ দাদরা

রাগ যোগ-এ বিলম্বিত ও দ্রুত খেয়াল এবং শেষে দাদরা পরিবেশন করেন সান্দিপ ভট্টাচার্য। সঙ্গত: সান্দিপ ঘোষ (তবলা), সন্দীপ মিশ্র (সরঙ্গী), সান্দিপ সেন (হরমোনিয়াম)।


 আদ্রিজা বন্দ্যোপাধ্যায়: ভরতনাট্যম

উদীয়মান শিল্পী আদ্রিজা বন্দ্যোপাধ্যায় মনোমুগ্ধকর ভরতনাট্যম পরিবেশন করেন।


 স্বরদরবারের শিক্ষার্থীদের সঙ্গীত

স্বরদরবারের সায়ন্তি ভট্টাচার্য, নীলাঞ্জনা সরকার ও রিমিল রায় পরিবেশন করেন রাগ বেহাগ। সঙ্গত করেন সায়ন চ্যাটার্জি (হরমোনিয়াম) ও গোপাল দাস (তবলা)।


 নিঠিন আমিনের বাঁশি: শ্যামকল্যাণ মান্দ

রাগ শ্যামকল্যাণ ও রাগ মান্দ পরিবেশন করেন নিঠিন আমিন। তবলায় ছিলেন শুভজ্যোতি গুহ।


 সমিত মালিকের ধ্রুপদ: রাগ কালাবতী

রাগ কালাবতীতে ধ্রুপদ ও ধামার পরিবেশন করেন সমিত মালিক। পখাওয়াজে ছিলেন মিঠুন চক্রবর্তী।


 পার্থ বোস: সেতারে সুরের পরিণতি

উৎসবের পরিণতি ঘটে পার্থ বোসের সেতার পরিবেশনার মাধ্যমে। রাগের শেষে ছিল একটি সুরেলা ঠুমরি। তবলায় ছিলেন দুর্জয় ভৌমিক।


দুই উৎসবে যেমন ছিল প্রথিতযশা শিল্পীদের সৌম্য পরিবেশনা, তেমনি ছিল নবীন প্রতিভার উন্মেষ—উৎসবজুড়ে বয়ে গেছে এক অনন্য সুরসুধা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *