প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও শিরোনামে। এবার টার্গেটে বিশ্বের সবচেয়ে বড় টেক কোম্পানিগুলোর একটি — অ্যাপল। সম্প্রতি এক বিবৃতিতে ট্রাম্প বলেন, যদি অ্যাপল আমেরিকার মাটিতে পণ্য উৎপাদন না করে, তাহলে তাদের ওপর ২৫% পর্যন্ত আমদানি শুল্ক চাপানো হবে।
কেন এই হুমকি?
অ্যাপল তাদের বেশিরভাগ প্রোডাক্ট, বিশেষত আইফোন, চীনে উৎপাদন করে। যদিও অ্যাপল একটি আমেরিকান কোম্পানি, কিন্তু উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় তারা বহু বছর ধরেই চীনের উপর নির্ভর করে আসছে।
ট্রাম্প মনে করেন, এতে আমেরিকান কর্মসংস্থানের ক্ষতি হচ্ছে এবং অর্থনীতি দুর্বল হচ্ছে। তার দাবি, “মেড ইন ইউএসএ” হোক অ্যাপলের নীতিগত সিদ্ধান্ত।
কী বলেছে ট্রাম্প?
ট্রাম্প বলেন:
Apple should make their products in the USA. If not, they should face a 25% tariff. We will bring back American jobs.
তার বক্তব্য অনুযায়ী, আমেরিকান কোম্পানি যদি নিজের দেশেই উৎপাদন না করে, তবে সেই কোম্পানিকে বিশেষ সুবিধা দেওয়া উচিত নয়।
অ্যাপলের পক্ষে যুক্তি কী?
অ্যাপলের দাবি, তারা শুধু উৎপাদন নয়, গবেষণা, ডিজাইন, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং—সবকিছুই আমেরিকাতেই করে থাকে। কিন্তু হার্ডওয়্যার উৎপাদনের জন্য চীনের দক্ষ শ্রমশক্তি, সরবরাহ চেইন এবং প্রস্তুত অবকাঠামো তুলনাহীন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সবকিছু হঠাৎ করে আমেরিকায় নিয়ে আসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল ও সময়সাপেক্ষ হবে।
বিশ্লেষণ: রাজনৈতিক না কি বাস্তব সমস্যা?
ট্রাম্পের এই বক্তব্যকে অনেকে ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ বলেই মনে করছেন। “আমেরিকা ফার্স্ট” নীতির পুনরাবৃত্তি এর মধ্যে রয়েছে। এতে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে দেশপ্রেম জাগ্রত করা হয়, বিশেষ করে যেসব অঞ্চলে শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
তবে বাস্তবতা হলো, বিশ্বায়নের যুগে একটি আইফোন বা ম্যাক তৈরি হয় বিশ্বের বিভিন্ন অংশের সমন্বয়ে—প্রযুক্তি যুক্তরাষ্ট্রের, যন্ত্রাংশ জাপান/দক্ষিণ কোরিয়ার, আর অ্যাসেম্বলিং হয় চীনে।
ট্রাম্পের হুমকি আসলেই বাস্তবে রূপ নেবে কি না, তা ভবিষ্যতের কথা। কিন্তু এটা স্পষ্ট—বিশ্ব রাজনীতিতে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর প্রভাব এবং তারা কোথায় উৎপাদন করছে, সেটি এখন শুধু ব্যবসার বিষয় নয়, বরং জাতীয় অর্থনীতি ও কূটনীতির বড় অংশ।
অ্যাপলের মতো টেক জায়ান্টদের জন্য এটা হতে পারে এক নতুন চ্যালেঞ্জের শুরু।