দীর্ঘদিনের দারিদ্র্য, দিনরাত পরিশ্রম আর সীমাহীন হতাশা—এটাই ছিল কুলতলি ব্লকের কেওড়ামাটাল এলাকার মুজিবর শেখের জীবনের বাস্তবতা। স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে জরির কাজ করে দিনে গুজরান হতো যেভাবে, তাতে রাতের খাবার কতটা জুটবে, তা নিয়ে প্রতিদিন ছিল দুশ্চিন্তা।
কিন্তু, মাত্র একটি লটারি টিকিট—বুধবার কাটেন আর বুধবারই বাজিমাত!
বুধবার বিকেলে কাটা টিকিট, সন্ধ্যায় কেল্লাফতে!
কচিয়ামারা বাজারে একটি পরিচিত দোকানে গিয়েছিলেন মুজিবর। দিনের কাজ শেষে হাতে যেটুকু টাকা ছিল, সেটাই খরচ করেন একটি লটারি টিকিটে। এমনটা নতুন কিছু নয়, ভাগ্য ফেরানোর আশায় এর আগেও বহুবার টিকিট কিনেছেন।
কিন্তু এইবারের টিকিট—সন্ধ্যা ৬টায় ড্র হতেই ঘোষণা হয়, এক কোটি টাকার প্রথম পুরস্কার জিতেছেন মুজিবর শেখ!
বিশ্বাস হয়নি, বারবার মিলিয়ে দেখেছেন
খবরটা শুনে হতবাক মুজিবর! প্রথমে নিজের চোখকেই বিশ্বাস করতে পারেননি। টিকিট হাতে বারবার নম্বর মিলিয়ে দেখেন। আশেপাশের লোকজনকে দেখান, কেউ যেন ভুল ধরিয়ে দেয়—এই ভয়ে।
কিন্তু না, সত্যিই এক কোটি টাকার ভাগ্য এসে ধরা দিয়েছে দরিদ্র এই পরিশ্রমীর হাতে!
রাতে আশ্রয় থানায়, স্বপ্নের পরিকল্পনা
এত টাকা হাতে আসার খবরে স্বাভাবিকভাবেই দুশ্চিন্তা বেড়ে যায়। রাতটা নিরাপদে কাটানোর জন্য থানায় আশ্রয় নেন মুজিবর। সেখানেই তিনি বলেন,
“জীবনটা এতদিন ছিল সংগ্রামের। এখন একটা পাকা বাড়ি বানাতে চাই। আর কিছু টাকা রাখব যেন বয়স হলে আর কষ্ট না করতে হয়।”
এক রাতেই জীবন বদল
মুজিবরের এই ঘটনা আবার প্রমাণ করল—জীবনে বদল আনতে কখন কী ঘটে যাবে, কেউ বলতে পারে না। পরিশ্রম, ভাগ্য আর বিশ্বাস—এই তিনের মেলবন্ধনই মুজিবরকে এনে দিল এক কোটি টাকার জয়!