গত কয়েক সপ্তাহে উপমহাদেশের ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি একেবারেই বদলে গেছে। ভারতের পহেলগাঁওতে জঙ্গি হামলা থেকে শুরু করে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’—এই ১৯ দিনে দুই দেশের মধ্যে যে ঘাত-প্রতিঘাত হয়েছে, তা শুধু সীমান্তে নয়, আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মঞ্চেও আলোড়ন তুলেছে।
১. পহেলগাঁও হামলা: যুদ্ধের আগুনে প্রথম স্ফুলিঙ্গ
১৯ দিন আগে জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর কনভয়ে চালানো জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারান বহু মানুষ। এই হামলার দায়ভার ভারত সরাসরি পাকিস্তান-ঘনিষ্ঠ জঙ্গিগোষ্ঠীর ওপর চাপায়। দেশজুড়ে শোক ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। সরকার প্রতিশোধের হুঁশিয়ারি দেয়।
২. জবাবি হামলা: ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’
পহেলগাঁও হামলার প্রতিশোধ নিতে ভারতীয় সেনাবাহিনী ও বায়ুসেনা সম্মিলিতভাবে শুরু করে ‘অপারেশন সিঁদুর’। পাকিস্তানের অধিকৃত কাশ্মীর এবং সীমান্তবর্তী জঙ্গি ঘাঁটিতে চালানো হয় নিশানা-বিহীন আক্রমণ। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
৩. সাইবার ও মিডিয়া যুদ্ধ
এই সময়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে শুধু সামরিক স্তরেই নয়, মিডিয়া ও সাইবার স্পেসেও উত্তেজনা চরমে ওঠে। সোশ্যাল মিডিয়া ও সরকারি চ্যানেলে তথ্য যুদ্ধ শুরু হয়। উভয় দেশই একে অপরকে দোষারোপ করে এবং নিজেদের জয়গাথা প্রচার করে।
৪. আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
জাতিসংঘ, আমেরিকা, রাশিয়া, চীন সহ বিশ্বের বড় শক্তিগুলো উভয় দেশকে সংযম দেখাতে অনুরোধ করে। তবে বেশিরভাগ দেশ ভারতকে ‘সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান’-এর জন্য ন্যায়সঙ্গত বলেই আখ্যা দেয়।
🧨 ৫. যুদ্ধ নয়, কিন্তু শান্তিও নয়
এই ১৯ দিনে ভারত ও পাকিস্তান সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণা না করলেও সীমান্তে নিয়মিত গোলাগুলি, ড্রোন হানা, পাল্টা হামলা এবং কথার লড়াই চলতেই থেকেছে। যুদ্ধ না হলেও পরিস্থিতি একেবারে যুদ্ধ-সদৃশ হয়ে ওঠে।
পহেলগাঁও হামলা থেকে শুরু করে অপারেশন সিঁদুর পর্যন্ত এই ১৯ দিন ভারতের জন্য ছিল প্রতিক্রিয়াশীল, কৌশলগত এবং আবেগতাড়িত। পাকিস্তানকেও পড়তে হয়েছে আন্তর্জাতিক চাপ ও অভ্যন্তরীণ সংকটে।
যদিও কিছুটা স্থিতাবস্থার আভাস মিলছে, কিন্তু দুই দেশের মধ্যে দ্বন্দ্বের এই পর্ব আমাদের আবার মনে করিয়ে দেয়—শান্তি সহজ নয়, এবং এর মূল্য দিতে হয় রক্ত, কূটনীতি এবং সাহসে।