২০২5 সালের মাঝামাঝি সময়ে দাঁড়িয়ে, এক সময়ের আতঙ্কের নাম করোনা ভাইরাস আবার ধীরে ধীরে মাথাচাড়া দিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে। স্বাস্থ্য দপ্তরের সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুযায়ী, রাজ্যে বর্তমানে সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৫৩৮।
যদিও সংখ্যাটি বড় আকারের নয়, তবে অল্প সময়ে সংক্রমণ বৃদ্ধি উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে অনেকের কাছে।
আশ্বস্ত করছেন চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞরা
এই সংক্রমণ বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে মানুষজনের মধ্যে দুশ্চিন্তা দেখা দিলেও, বিশেষজ্ঞরা স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন—‘উদ্বেগের কিছু নেই’।
তাঁদের মতে:
- সংক্রমণের প্রকৃতি তুলনামূলকভাবে হালকা
- অধিকাংশ রোগী হালকা জ্বর, সর্দি, কাশি নিয়েই সুস্থ হয়ে উঠছেন
- হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা অত্যন্ত কম
- টিকাকরণের জন্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকাংশে তৈরি হয়েছে
ড. অরিন্দম সেনগুপ্ত, চিফ ভাইরোলজিস্ট, বলেন—
“এটি করোনা ভাইরাসের একটি হালকা ফর্ম হতে পারে। যেহেতু বেশিরভাগ মানুষ ইতিমধ্যেই টিকা নিয়েছেন এবং অনেকের মধ্যে প্রাকৃতিক প্রতিরোধ ক্ষমতাও তৈরি হয়েছে, তাই আতঙ্কের কিছু নেই। তবে সতর্ক থাকা জরুরি।”
স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রস্তুতি ও নির্দেশিকা
পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য দপ্তর ইতিমধ্যেই কিছু জরুরি ব্যবস্থা নিচ্ছে:
- সমস্ত হাসপাতালে আইসোলেশন বেড প্রস্তুত রাখা
- RT-PCR ও Rapid Test-এর জন্য পর্যাপ্ত কিট মজুত রাখা
- প্রাথমিক উপসর্গ দেখা দিলেই দ্রুত পরীক্ষা করানোর পরামর্শ
তবে এই মুহূর্তে কোনও লকডাউন বা কঠোর নিষেধাজ্ঞার পরিকল্পনা নেই।
সাধারণ মানুষকে যা করতে হবে
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী কিছু সাধারণ সতর্কতা অবলম্বন করলেই সংক্রমণ রোধ সম্ভব:
- ভিড়ের জায়গায় মাস্ক ব্যবহার করুন
- নিয়মিত হাত ধুয়ে ফেলুন বা স্যানিটাইজ করুন
- কারও মধ্যে উপসর্গ থাকলে দূরত্ব বজায় রাখুন
- টিকাবিহীন হলে দ্রুত টিকা নিন
- বয়স্ক বা অসুস্থ ব্যক্তিদের বিশেষভাবে সতর্ক রাখা উচিত
করোনা আবারও উপস্থিতির জানান দিচ্ছে ঠিকই, কিন্তু এবার আমরা অনেক বেশি প্রস্তুত।
বিনাযুদ্ধে হার নয়—সচেতনতা, টিকাকরণ ও স্বাস্থ্যবিধিই এখন আমাদের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার।
সকলকে অনুরোধ—ভয় না পেয়ে বরং দায়িত্ববান নাগরিকের মতো আচরণ করুন।