রথযাত্রার আগে পুরী জগন্নাথ মন্দিরে তৈরি হয়েছিল এক অস্বস্তিকর বিতর্ক। অভিযোগ উঠেছিল, প্রভু জগন্নাথের জন্য রাজবৈদ্যের পাঠানো দশমূল মোদক — এক প্রাচীন ঔষধি লাড্ডু — চুরি গিয়েছে।
প্রতিবছর স্নানযাত্রার পর প্রভু জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রা কয়েকদিন ‘অনশক্ত’ অবস্থায় থাকেন। এই সময় তাঁরা থাকেন রুদ্ধদ্বার কক্ষে এবং তাঁদের সেবায়েতরাই দায়িত্বে থাকেন। সেই সময় প্রথা অনুযায়ী রাজবৈদ্য তাঁদের সুস্থতার জন্য ‘দশমূল মোদক’ তৈরি করে নিবেদন করেন।
এবার সেই মোদকেরই নাকি ৭০টি খোয়া গিয়েছে — এমনটাই অভিযোগ করেন প্রভু বলভদ্রের বড়াগ্রাহী হলধর দাস মহাপাত্র। তিনি জানান, মোট ৩১০টি মোদক নিবেদন করা হয়েছিল, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অনুপস্থিত।
এই অভিযোগে মন্দির কর্তৃপক্ষের কাছে নালিশ জমা পড়ে, শুরু হয় তদন্ত। ঘটনাটি সামনে আসতেই ভক্তদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে উদ্বেগ, কারণ তাঁদের মতে এটি অশুভ লক্ষণ। শেষমেশ পরিস্থিতি সামাল দিতে হস্তক্ষেপ করে রাজ্য সরকার।
ওড়িশার আইনমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ হরিচন্দন পরে জানান, “পুরীর জগন্নাথ মন্দির থেকে কোনও মোদক চুরি হয়নি।” তিনি বলেন, “সেবায়েতদের কাছ থেকে অভিযোগ এসেছিল, কিন্তু মন্দিরের প্রধান প্রশাসক অরবিন্দ পাধী নিশ্চিত করেছেন যে মোদক সঠিক স্থানেই রয়েছে।”
তবে এই বিবৃতি আসার পরেও বিতর্ক পুরোপুরি থামেনি। স্থানীয় মানুষ ও ভক্তদের মধ্যে রয়ে গিয়েছে নানা প্রশ্ন — যদি মোদক চুরি না হয়ে থাকে, তাহলে এমন বিভ্রান্তি কেন তৈরি হলো?
এই ঘটনার মধ্যেই পুরীতে রথযাত্রার প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে। বিতর্ক চাপা থাকলেও ভক্তদের মনে রয়ে গেছে প্রশ্নচিহ্ন।