চাষের ক্ষতি, বাজারে প্রভাব—বৃষ্টিতে নাজেহাল আনাজ বাণিজ্য

গত কয়েকদিন ধরে রাজ্যের বিভিন্ন অংশে টানা বর্ষণে চাষাবাদ ব্যাহত হয়েছে। বিশেষ করে নিচু জমিতে জল জমে যাওয়ায় বিভিন্ন আনাজপত্রের গাছ পচে যাচ্ছে বলে জানাচ্ছেন কৃষকরা। তার সরাসরি প্রভাব পড়েছে স্থানীয় ও শহরের বাজারে।

উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হুগলি, হাওড়া, পূর্ব মেদিনীপুর-সহ বেশ কিছু কৃষিপ্রধান জেলায় বর্ষার অতিরিক্ত জল নিষ্কাশন না হওয়ায় ঢেঁড়স, ঝিঙ্গে, পটল, টমেটো, শসা, লাউ ইত্যাদি আনাজে পচন ধরেছে। কোথাও আবার নতুন করে বীজ রোপণ করতে হচ্ছে, ফলে দেরি হচ্ছে ফসল আসতে।

এক কৃষক বলেন, “এই সময়টা ছিল আমাদের বিক্রির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু টানা বৃষ্টিতে সব নষ্ট হয়ে গেল। অনেক জায়গায় আবার নতুন করে বপন করতে হচ্ছে।”

ফলত, শহরাঞ্চলে সেই আনাজের জোগান কমে যাওয়ায় দাম বেড়েছে ঢেঁড়স, পটল, ঝিঙ্গে ও করলার মতো সবজির। সাধারণত যেখানে ঢেঁড়স পাওয়া যেত ২৫-৩০ টাকা কেজি, এখন তা বেড়ে ৫০-৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। পটলের দামও ৪৫-৫০ টাকা ছুঁয়েছে।

কেন বাড়ছে দাম?

  • ফসলের ক্ষতি: জল জমে থাকায় অনেক ফসলই মাঠে পচে গেছে।
  • সরবরাহ ব্যাহত: রাস্তা ও যোগাযোগ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হওয়ায় আনাজ সরবরাহ কমেছে।
  • চাহিদা অপরিবর্তিত: শহরের বাজারে চাহিদা একই থাকায় কম সরবরাহে দাম বাড়ছে।

চাষিদের দাবি:
সরকার যেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জরুরি ভিত্তিতে ক্ষতিপূরণ দেয় ও কৃষি সহায়তা পৌঁছে দেয়।
তাঁরা আরও চান, জল নিষ্কাশনের ব্যবস্থা দ্রুততর করা হোক।

ক্রেতাদের অভিযোগ:
বাজারে গিয়ে দাম শুনে অনেকে আশ্চর্য হচ্ছেন। এক গৃহবধূ বলেন, “সপ্তাহ খানেক আগেও যেটা ২০-২৫ টাকায় কিনতাম, আজ সেটাই ৫০ টাকা চাচ্ছে! পরিবার চালাতে কষ্ট হচ্ছে।”

উপসংহার:
টানা বর্ষণের ফলে কৃষক এবং ক্রেতা উভয়ই সমস্যায় পড়েছেন। প্রশাসনের তরফ থেকে কৃষকদের সহযোগিতার পাশাপাশি বাজার নিয়ন্ত্রণে বিশেষ নজর দেওয়ার দাবি তুলছে বিভিন্ন মহল। আবহাওয়া স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এই পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা কম বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *